বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা:ফের কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেন পশ্চিমবাংলার অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। এবার তাঁর হাতিয়ার রাজ্যগুলির বকেয়া জিএসটি এবং ক্যাগ রিপোর্ট। শুক্রবার টুইট করে সরাসরি তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বকেয়া জিএসটি নিয়ে তথ্য গোপন করার কারণ জানতে চেয়েছেন। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে তাঁর এই আক্রমণের কোনও জবাব দেওয়া হয়নি।
জিএসটি বাবদ রাজ্যগুলির প্রাপ্য ৪২ হাজার ২৭২ কোটি টাকা তহবিলের কথা কেন্দ্রীয় সরকার গোপন করে গিয়েছে বলে ক্যাগ রিপোর্টে বলা হয়েছে। আর সেই খবর শুক্রবার প্রকাশ্যে আসতেই মুখ খুলেছেন পশ্চিমবাংলার অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। টুইটে পরিষ্কার তিনি লিখেছেন, ‘নিজেদের সংস্থার কাছেই তথ্য গোপন করে ধরা পড়ে গিয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। রাজ্যগুলির সেস ক্ষতিপূরণ তহবিলের পরিমাণ ৪২ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। আর এই তথ্যই গোপন করেছে সরকার। আর এটা জিএসটি আইন ভাঙার শামিল।’ তিনি স্পষ্ট লিখেছেন, ‘এটা খুবই লজ্জার বিষয় যে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির কাছে রাজকোষ ঘাটতি লুকোতে কেন্দ্রীয় সরকার এই কাজ করেছে।’
অর্থমন্ত্রী হওয়ার আগে অমিত মিত্র শিল্পমহলের মানুষ ছিলেন। সব জায়গায় তিনি সজ্জন মানুষ হিসেবেই পরিচিত। বাংলায় রাজনৈতিক পালাবদল হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজ্যের অর্থমন্ত্রকের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন তিনি। রাজনীতিতে কাঁদা ছোঁড়াছুঁড়ির খেলায় গা ভাসাতে তাঁকে কখনও দেখা যায়নি। বরং যখন মুখ খুলেছেন, তখন হাতে তথ্য নিয়েই নিজের কথা বলেছেন। তাই এদিন তাঁর টুইট নিয়ে রাজনীতি এবং অর্থনীতির ওপর মহলে যে চর্চা হবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তাই অমিত মিত্রের আক্রমণের জবাবে কেন্দ্রীয় সরকার কী বলে, সে দিকেই এখন অর্থনৈতিক মহলের পাশাপাশি রাজনৈতিক মহলও তাকিয়ে রয়েছে।
জিএসটি নিয়ে তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে অনেকেই ভিন্নমত নন। উল্লেখ্য, জিএসটির প্রাপ্য নিয়ে পশ্চিমবাংলা সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের মতপার্থক্য চলছে বেশ কয়েক মাস ধরেই। রাজ্যের দাবি খারিজ করে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বারবারই বলেছে, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যগুলিকে জিএসটি বাবদ ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব নয়। পরিবর্তে রাজ্যগুলিকে সরকার ঋণে ছাড় দিতে পারে। কিন্তু অমিত মিত্রের বক্তব্য, জিএসটি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দায় নিতে কেন্দ্রকেই। রাজ্যগুলির ওপর এই দায় চাপিয়ে দেওয়া অন্যায়। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় সরকার ঋণ নিতে পারে।